এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যাখ্যা করতে পারবে।
২। বায়োমেট্রিক সিস্টেম বাস্তবায়নের উপাদান বর্ণনা করতে পারবে।
৩। বায়োমেট্রিক মেকানিজম ব্যাখ্যা করতে পারবে।
৪। বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত মানুষের গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারবে।
৫। বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তির প্রয়োগ ক্ষেত্র বর্ণনা করতে পারবে।
Go for English Version
বায়োমেট্রিক কী ?
গ্রীক শব্দ “bio” যার অর্থ Life বা প্রাণ ও “metric” যার অর্থ পরিমাপ করা। বায়োমেট্রিক হলো বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটা পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি।
বায়োমেট্রিক হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অথবা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কি?
অন্য ভাবে বলা যায়, বায়োমেট্রিক সিস্টেম হলো এমন একটি প্রযুক্তি যা কোনও ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয়, আচরণগত বা উভয় বৈশিষ্ট্যকে ইনপুট হিসাবে গ্রহণ করে, এটি বিশ্লেষণ করে এবং প্রকৃত ব্যবহারকারী হিসাবে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে।
প্রতিটি মানুষই বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে স্বতন্ত্র, এই বৈশিষ্ট্যগুলোই প্রতিটি মানুষকে একে অপর থেকে আলাদা করে তুলে।বায়োমেট্রিক সিস্টেমে ব্যক্তি সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে এই বৈশিষ্ট্যগুলো বা বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটাগুলোকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ
শরীরবৃত্তীয়/গঠনগত(Physiological) বৈশিষ্ট্যঃ
১। ফিংগার প্রিন্ট (Finger Print)
২। হ্যান্ড জিওমেট্রি ( Hand Geometry)
৩। ফেইস (Face)
৪। আইরিস (Iris)
৫। ডি.এন.এ (DNA)
আচরণগত(Behavioral) বৈশিষ্ট্যঃ
১। ভয়েস (Voice)
২। সিগনেচার (Signature)
৩। টাইপিং কীস্ট্রোক ( Typing Keystroke)
বায়োমেট্রিক এর উপাদান
সাধারণত, একটি বায়োমেট্রিক সিস্টেমের চারটি মূল উপাদান থাকে। যেমন-
বায়োমেট্রিক সিস্টেম কীভাবে কাজ করে?
বায়োমেট্রিক সিস্টেম সনাক্তকরণ এবং যাচাইকরণের জন্য চারটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে –
১। প্রথমে কোন ব্যক্তির বায়োলজিক্যাল ডেটা ডিজিটাল কোড হিসেবে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়।
২। পরবর্তীতে বায়োমেট্রিক ডিভাইস কোন ব্যক্তির বায়োলজিক্যাল ডেটা ইনপুট নিয়ে ডিজিটাল কোডে রুপান্তর করে।
৩। এই কোডকে ডেটাবেজে সংরক্ষিত কোডের সাথে তুলনা করে।
৪। যদি ডেটাবেজে সংরক্ষিত কোডের সাথে মিলে যায় তবে তাকে ডিভাইস সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
চিত্রঃ বায়োমেট্রিক সিস্টেমের সাধারণ কার্য প্রক্রিয়া
♦ ভিডিও লেকচার পেতে YouTube চ্যানেলটিতে Subscribe করো।
♦ HSC ICT প্রথম অধ্যায়ের নোট পেতে ক্লিক করো।
♦ ICT সম্পর্কিত যেকোন প্রশ্নের উত্তর জানতে Facebook গ্রুপে যুক্ত হও।
বায়োমেট্রিক কত প্রকার ?
মানুষের জৈবিক বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক সিস্টেমের প্রকারভেদঃ
শরীরবৃত্তীয় সিস্টেম (Physiological System):
১। ফিংগার প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেম (Fingerprint Recognition system)
২। হ্যান্ড জিওমেট্রি রিকগনিশন সিস্টেম (Hand Geometry Recognition system)
৩। ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম (Facial Recognition System)
৪। আইরিস রিকগনিশন সিস্টেম (Iris Scanning System)
৫। ডি.এন.এ (DNA) টেস্টিং সিস্টেম (DNA Testing System)
আচরণগত সিস্টেম (Behavioral System):
১। ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম (Voice Recognition System)
২। সিগনেচার ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Signature Verification System)
৩। টাইপিং কীস্ট্রোক ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Typing Keystroke Verification System )
ফিংগার প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেম (Fingerprint Recognition system)
এটি বায়োমেট্রিক সিস্টেমে ব্যক্তি সনাক্তকরণের জন্য সর্বাধিক পরিচিত এবং ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক সিস্টেম। ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় রিকগনিশন সিস্টেম।
প্রকৃতিগতভাবে প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট পৃথক থাকে। আঙ্গুলের পৃষ্ঠ, খাঁজ এবং রেখার দিক এর সমন্বয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট গঠিত। পৃষ্ঠের তিনটি মৌলিক প্যাটার্ন রয়েছে যথা: খিলান, লুপ এবং ঘূর্ণি আকৃতির। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর পাশাপাশি বিভাজন এবং দাগগুলো দ্বারা ফিঙ্গার প্রিন্টের স্বতন্ত্রতা নির্ধারিত হয়।
ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার ফিঙ্গার প্রিন্টের ডিজিটাল ছবি তৈরি করে। তারপর কম্পিউটার ফিঙ্গার প্রিন্টের ডিজিটাল ছবিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন করে বিশ্লেষণ করে এবং প্যাটার্ন-ম্যাচিং সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত ফিঙ্গার প্রিন্টের নমুনার সাথে তুলনা করে কোন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে।
ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার এমন একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইস যা কোনও ফিঙ্গার প্রিন্টকে ইনপুট হিসাবে নেয় এবং ডেটাবেজে সংরক্ষিত ফিঙ্গার প্রিন্টের নমুনার সাথে তুলনা করে।
সুবিধাঃ
১। খরচ তুলনামূলক কম।
২। সনাক্তকরণের জন্য সময় কম লাগে।
৩। এটি সবচেয়ে সমসাময়িক পদ্ধতি।
৪। এটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং সুরক্ষিত।
৫। এটি মেমোরির জায়গা কম নেয়।
অসুবিধাঃ
১। আঙ্গুলে কোন প্রকার আস্তর লাগানো থাকলে সনাক্তকরণে সমস্যা হয়।
২। ছোট বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয়।
ব্যবহারঃ
১। কোন প্রোগ্রাম বা ওয়েবসাইটে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার।
২। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ ।
৩। ব্যাংকিং পেমেন্ট সিস্টেমে।
৪। ডিএনএ সনাক্ত করার কাজে।
হ্যান্ড জিওমেট্রি রিকগনিশন সিস্টেম (Hand Geometry Recognition system)
প্রতিটি মানুষের হাতের আকৃতি ও জ্যামিতিক গঠনেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। হ্যান্ড জিওমিট্রি পদ্ধতিতে মানুষের হাতের আকৃতি বা জ্যামিতিক গঠন ও হাতের সাইজ ইত্যাদি নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষকে সনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতিতে হ্যান্ড জিওমেট্রি রিডার হাতের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ, পুরুত্ব, পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল, আঙ্গুলের দৈর্ঘ্য ও অবস্থান এবং সামগ্রিকভাবে হাড়ের কাঠামো ইত্যাদি পরিমাপ করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত হ্যান্ড জিওমেট্রির নমুনার সাথে তুলনা করে ব্যক্তি সনাক্ত করে ।
সুবিধাঃ
১। ব্যবহার করা সহজ।
২। সিস্টেমে অল্প মেমোরির প্রয়োজন।
অসুবিধাঃ
১। ডিভাইস গুলোর দাম তুলনামূলক বেশি।
২। ফিংগার প্রিন্ট এর চেয়ে ফলাফলের সূক্ষ্মতা কম।
ব্যবহারঃ
১। এয়ারপোর্টের আগমন-নির্গমন নিয়ন্ত্রণ ।
২। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবীদের উপস্থিতি নির্ণয়ে।
৩। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং লাইব্রেরিতে।
HSC ICT প্রথম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস
- ক্রায়োসার্জারি
- বায়োইনফরমেটিক্স
- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
- ন্যানোটেকনোলজি
ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম (Facial Recognition System)
ফেইস রিকগনিশন সিস্টেমে মানুষের মুখের গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে সনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর মুখের চোয়াল ও চিবুকের আকার-আকৃতি, চোখের আকার ও অবস্থান, দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব, নাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস, চোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি তুলনা করার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়।
সুবিধাঃ
১। ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম সহজে ব্যবহারযোগ্য।
২। এই পদ্ধতিতে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।
অসুবিধাঃ
১। আলোর পার্থক্যের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
২। সময়ের সাথে সাথে মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তিত হয় ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
৩। স্বতন্ত্রতা গ্যারান্টিযুক্ত নয়, উদাহরণস্বরূপ, অভিন্ন যমজদের ক্ষেত্রে।
৪। কোন ব্যবহারকারীর মুখ যদি হালকা হাসির মতো বিভিন্ন ভাব প্রকাশ করে তবে ফলাফলটি প্রভাবিত করতে পারে।
ব্যবহারঃ
১। কোন বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে।
২। কোন আইডি নম্বর সনাক্তকরণে ।
আইরিস স্ক্যানিং সিস্টেম (Iris Scanning System)
বায়োমেট্রিক প্রযুক্তিতে ব্যক্তি সনাক্তকরনের জন্য চোখের আইরিসকে আদর্শ অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইরিস রিকগনিশন সিস্টেমে মানুষের চোখের আইরিস প্যাটার্নের ভিত্তিতে কাজ করে। একজন ব্যক্তির চোখের আইরিস এর সাথে অন্য ব্যক্তির চোখের আইরিস এর প্যাটার্ন সবসময় ভিন্ন হয়।
চোখের অক্ষিগোলকের সামনের লেন্সের ওপরে অবস্থিত রঙিন পর্দাকে আইরিশ বলে। চোখের মাঝে গাঢ় গোল অংশটির নাম পিউপিল বা চোখের মণি। এর চারপাশেই আইরিশের অবস্থান। এটি পিউপিলের ছোট বা বড় হওয়ার আকার নিয়ন্ত্রণ করে। চোখের আইরিশ যখন প্রসারিত হয়, তখন পিউপিল ছোট হয়ে যায়। আবার আইরিশ সংকুচিত হলে পিউপিল বড় হয়। আইরিশ দেখতে অনেকটা আংটির মতো। এটি বাদামি, সবুজ, নীল—বিভিন্ন রঙের হয় এবং আলোর তীব্রতার ওপর নির্ভর করে সংকুচিত বা প্রসারিত হয়। এতে পিউপিলের আকার পরিবর্তনসহ লেন্স ও রেটিনায় আপতিত আলোর পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হয়।
আইরিস রিকগনিশন সিস্টেমে চোখের চারপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা করা হয়।
সুবিধাঃ
১। এটি অত্যন্ত নির্ভুল কারণ দুটি আইরিস মিলের সম্ভাবনা ১0 বিলিয়ন লোকের মধ্যে ১ জন।
২। আইরিস প্যাটার্নটি কোনও ব্যক্তির জীবদ্দশায় একই থাকে বলে এটি অত্যন্ত আদর্শ।
৩। ব্যবহারকারীকে চশমা বা যোগাযোগের লেন্স অপসারণ করতে হবে না; কারণ তারা সিস্টেমের নির্ভুলতার বাধা দেয় না।
৪। এটি সিস্টেমের সাথে কোনও শারীরিক সংযোগ থাকে না।
৫। সনাক্তকরণে খুবই কম সময় লাগে।
৬। এতে ছোট আকারের টেম্পলেটের কারণে তাত্ক্ষণিক সনাক্তকরণ (২ থেকে ৫ সেকেন্ড) করতে পারে।
অসুবিধাঃ
১। আইরিস স্ক্যানার ব্যয়বহুল।
২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।
৩। কোন ব্যক্তির সঠিক স্ক্যান করার জন্য তার মাথাটি স্থির রাখতে হয়।
ব্যবহারঃ
১। এই সিস্টেমটি পাসপোর্ট ছাড়াই বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়।
২। এছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ কাজে ব্যবহার করা হয়।
৩। গুগল তাদের ডেটা সেন্টারে অ্যাক্সেসের জন্য আইরিস রিকগনিশন ব্যবহার করে।
ডি.এন.এ (DNA) টেস্টিং সিস্টেম (DNA Testing System)
Deoxyribo Nucleic Acid (DNA) হলো জিনগত উপাদান যা কোষের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত। প্রতিটি মানুষ তার ডিএনএতে পাওয়া বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা চিহ্নিত করা যায়।
DNA টেস্টের মাধ্যমে যেকোন ব্যক্তিকে অত্যন্ত নিখুঁত ও প্রশ্নাতীতভাবে শনাক্ত করা যায়।
DNA যে কোন উৎস থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। যেমন- রক্ত, চুল, আঙুলের নখ, মুখের ত্বক, রক্তের দাগ, লালা এবং একবার বা দুবার ব্যবহার করা যেকোন জিনিস থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা যায়।
ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের এর সাহায্যে ব্যক্তি সনাক্তকরণের বিষয়টি অনেক বেশি বিজ্ঞান সম্মত। কোন ব্যক্তির দেহ কোষ থেকে ডিএনএ আহরণ করার পর তার সাহায্যেই কতিপয় পর্যায়ক্রমিক ধাপ অনুসারে ঐ ব্যক্তির ডিএনএ প্রোফাইল করতে হয়।
ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মৌলিক ধাপগুলো হলো-
১। রক্ত, লালা, চুল ইত্যাদি থেকে অর্জিত নমুনা থেকে ডিএনএ পৃথক করা।
২। ডিএনএ নমুনাকে ছোট ছোট সেগমেন্টে ভাগ করা।
৩। আকার অনুযায়ী ডিএনএ সেগমেন্টেগুলোকে সংগঠিত করা।
৪। বিভিন্ন নমুনা থেকে ডিএনএ সেগমেন্টেগুলোকে তুলনা করা।
সুবিধাঃ
১। পদ্ধতিগত কোন ভুল না থাকলে সনাক্তকরণে সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।
অসুবিধাঃ
১। ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং তৈরি ও সনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে।
২। ডিএনএ প্রোফাইলিং করার সময় পদ্ধতিগত ভুল ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং এর ভুলের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
৩। সহোদর যমজদের ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।
৪। তুলনামূলক খরচ বেশি।
ব্যবহারঃ
১। অপরাধী সনাক্তকরণে
২। পিতৃত্ব নির্ণয়ে
৩। বিকৃত শবদেহ শনাক্তকরণে
৪। লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশ বৃদ্ধির জন্য
৫। চিকিৎসা বিজ্ঞানে
ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম (Voice Recognition System)
ভয়েস এবং স্পিচ রিকগনিশন দুটি পৃথক বায়োমেট্রিক পদ্ধতি যা মানুষের কণ্ঠের উপর নির্ভরশীল। উভয়ই যোগাযোগহীন, সফ্টওয়্যার ভিত্তিক প্রযুক্তি।
ভয়েস রিকগনিশন, সাধারণত ভয়েসপ্রিন্ট হিসাবেও উল্লেখ করা হয়, এটি ভোকালের সাহায্যে ব্যক্তি সনাক্তকরণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতিতে, ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বরকে মাইক্রোফোনের সাহায্যে ইনপুট নিয়ে তা সফটওয়্যারের সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রুপান্তর করে প্রথমে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তীকালে ভয়েস রেকর্ডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বর রেকর্ড করা হয় এবং ডেটাবেজে সংরক্ষিত ভয়েস ডেটা ফাইলের সাথে তুলনা করে কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।
সুবিধাঃ
১। সহজ ও কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য পদ্ধতি।
অসুবিধাঃ
১। অসুস্থতা (সর্দি, কাশি) জনিত কারনে কোন ব্যবহারকারীর কন্ঠ পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে শনাক্তকরণে সমস্যা হয়।
২। সূক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে কম।
ব্যবহারঃ
১। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।
২। টেলিফোনের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩। টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের নিরাপত্তায়।
সিগনেচার ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Signature Verification System)
সিগনেচার ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে বিশেষ ধরণের একটি কলম এবং প্যাড বা টেবলেট পিসি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ কলম ব্যবহার করে ডিজিটাল প্যাডে স্বাক্ষর করতে হয়। এই পদ্ধতিতে স্বাক্ষরের আকার, লেখার গতি, লেখার সময় এবং কলমের চাপকে পরীক্ষা করে ব্যবহারকারীর স্বাক্ষর সনাক্ত করা হয়।
এটি একটি বহুল ব্যবহৃত ও দীর্ঘদিনের প্রচলিত পদ্ধতি।
সুবিধাঃ
১। এটি সর্বস্থরের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।
২। এই পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ কম।
৩। সনাক্তকরণে কম সময় লাগে।
অসুবিধাঃ
১। যারা স্বাক্ষর জানে না তাদের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না।
ব্যবহারঃ
১। ব্যাংক-বীমা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাক্ষর সনাক্তকরণের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে।
টাইপিং কীস্ট্রোক ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Typing Keystroke Verification System )
টাইপিং কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেমে ব্যবহারকারীর টাইপিং ধরণ, ছন্দ এবং কীবোর্ডে টাইপের গতি বিশ্লেষণ করে ব্যক্তি সনাক্ত করা হয়।
কিবোর্ড কিংবা এ জাতীয় কোন ইনপুট ডিভাইসে তার গোপনীয় কোড কত দ্রুত টাইপ করে দিতে পারে তার সময় পূর্বের সময়ের সাথে মিলিয়ে কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।
কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেমে dwell time এবং flight time ব্যবহৃত হয়।
dwell time – যতক্ষণ সময় কী(KEY) টি চাপ দেওয়া হয়
flight time – একটি কী ছেড়ে দেওয়া এবং পরবর্তী কী চাপ দেওয়ার মধ্যবর্তী সময়
বায়োমেট্রিক সিস্টেমের ব্যবহার / বায়োমেট্রিক কোথায় ব্যবহৃত হয় ?
বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ
১। কোন কক্ষ, প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার ও যেকোন ডিজিটাল সিস্টেম এর প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ।
২। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতি রেকর্ড করতে।
৩। বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট তৈরিতে।
৪। ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরিতে।
৫। ই-কমার্স ও স্মার্ট কার্ড তৈরিতে ।
৬। ATM ও অনলাইন ব্যাংকিং নিরাপত্তায়।
৭। অপরাধী সনাক্তকরণে।
৮। পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নির্ণয়ে।
৯। বিকৃত মৃতদেহ শনাক্তকরণে।
১০। লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশ বৃদ্ধির জন্য।
১১। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে।
বায়োমেট্রিক এর সুবিধা
- পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়া বা চুরি হওয়ার কোন সমস্যা নেই
- ইতিবাচক এবং নির্ভুল সনাক্তকরণ
- সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
- নিরাপদ এবং ব্যবহার বান্ধব
HSC ICT এর সকল অধ্যায়
- প্রথম অধ্যায়ের টপিকসমূহ
- দ্বিতীয় অধ্যায়ের টপিকসমূহ
- তৃতীয় অধ্যায়ের টপিকসমূহ
- চতুর্থ অধ্যায়ের টপিকসমূহ
- পঞ্চম অধ্যায়ের টপিকসমূহ
- ষষ্ঠ অধ্যায়ের টপিকসমূহ
পাঠ মূল্যায়ন-
জ্ঞানমূলক প্রশ্নসমূহঃ
ক। বায়োমেট্রিক কী?
অনুধাবনমূলক প্রশ্নসমূহঃ
খ। ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর। [ব. বোর্ড ২০১৭, কু. বোর্ড-২০১৬]
খ। ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি সবসময় ব্যক্তি সনাক্ত করতে পারে না’ – ব্যাখ্যা কর।
খ। “প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা যায়”- ব্যাখ্যা কর। [চ. বোর্ড-২০২৩]
খ। ‘আচরণিক ডেটা’ – ব্যাখ্যা কর। [ঢা. বোর্ড-২০২৩]
খ। ‘বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি মাঝে-মাঝে ব্যক্তি সনাক্ত করণে ব্যর্থ হয়’ – ব্যাখ্যা কর।
খ। আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি সনাক্তকরণের পদ্ধতি বুঝিয়ে লিখ। [ম. বোর্ড-২০২৩, সি. বোর্ড-২০১৯]
খ। বায়োমেট্রিক একটি আচরণীক বৈশিষ্ট্য নির্ভর প্রযুক্তি – ব্যাখ্যা কর।
খ। অফিসের নিরাপত্তার জন্য বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার সুবিধাজনক-ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নসমূহঃ
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
সাভারের রানা প্লাজা ধ্বংসে নিহত বহু পোশাক শ্রমিকদের পরিচয় প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে সরকারের সদিচ্ছায় উচ্চ প্রযুক্তির মাধ্যমে অধিকাংশ লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের লাশ শনাক্তকরণের জন্য গৃহীত পদ্ধতি চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা কর।
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
রফিক সাহেব তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে কম্পিউটার প্রযুক্তির আওতায় এনেছেন। তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান গেইটে প্রবেশ করার সময় একটি মেশিনে বৃদ্ধাঙুল রাখলে গেইটটি খুলে যায়। অপরদিকে কর্মচারীদের নিজেদের রুমে প্রবেশ করার সময় একটি মেশিনের সামনে কিছুক্ষন তাকাতে হয়।
গ) প্রতিষ্ঠানের প্রধান গেইটে প্রবেশ প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ) প্রধান গেইটে এবং কর্মচারীদের রুমে প্রবেশের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতিদ্বয়ের মধ্যে কোনটি অধিক সুবিধাজনক? -বিশ্লেষণ কর।
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
বাংলাদেশ পাসপোর্ট অফিস মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট তৈরির জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে আবেদনকারীর আঙুলের ছাপ, সিগনেচার এবং মুখমণ্ডলের ছবি সংগ্রহ করে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করে। কিছু ব্যক্তি নকল পাসপোর্ট তৈরির জন্য পাসপোর্ট অফিসের ডেটাবেজ হ্যাক করার চেষ্টা করে।
ঘ) পাসপোর্ট অফিসে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেটা সংগ্রহ করা হয় তা বিশ্লেষণ কর।
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
নাঈম একদিন তার গবেষক মামার অফিসে গিয়ে দেখতে পেল অফিসের কর্মকর্তাগণ মূল দরজার নির্ধারিত জায়গায় বৃদ্ধাঙ্গুল রাখতেই দরজা খুলে যাচ্ছে। সে আরও দেখতে পেল যে তার মামা গবেষণা কক্ষের বিশেষ স্থানে কিছুক্ষণ তাকাতেই দরজা খুলে গেল। নাঈম তার মামার কাছ থেকে জানতে পারলো যে তিনি মিষ্টি টমেটো উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছেন।
ঘ) উদ্দীপকে দরজা খোলার প্রযুক্তিদ্বয়ের মধ্যে কোনটি বহুল ব্যবহৃত বিশ্লেষণপূর্বক মতামত দাও।
উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
ভিনক্লু নামে জাপানের এক প্রযুক্তি কোম্পানি ডিজিটাল প্রযুক্তির কৃত্রিম গৃহকর্মী তৈরি করেছে যার নাম দেয়া হয়ছে হিকারি। এই গৃহকর্মীকে দেখা যাবে হলোগ্রাফিক পর্দায় । হিকারি তার গৃহকর্তাকে ঘুম থেকে জাগানো, গুডমনিং বলা, অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন বার্তা পাঠানোর কাজও করবে। রাফি সদ্য পড়াশুনা শেষ করে বেসরকারি কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেছে। যেহেতু সে বাসায় একা থাকে তাই মাঝে মাঝে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। সেজন্য সে একটি হিকারি কিনার সিদ্ধান্ত নিলেন। যেহেতু হিকারির দাম বেশি তাই বাসা থেকে চুরি না হয় সেজন্য বাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তা করলেন যাতে পরিচিত ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট বাটনে আংগুলের ছাপ দিয়ে বাসায় প্রবেশ করতে পারবে। যদিও নিরাপত্তার জন্য তার অফিসের টাকার ভল্টে প্রবেশের জন্য মাইক্রোফোনে কথা বলে প্রবেশ করতে হয়।
ঘ) উদ্দীপকের বাসা ও অফিসে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কৌশলদ্বয়ের মধ্যে কোনটি বেশি উপযোগী- বিশ্লেষণপূর্বক তোমার মতামত দাও।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নসমূহঃ
১। বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট হলো-
ক) ইউনিক আইডেনটিটি খ) ফিঙ্গার আইডেনটিটি গ) ইনপুট ডেটা ঘ) বায়োলজিক্যাল ডেটা
২। শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মানুষকে শনাক্ত করার প্রযুক্তিকে কী বলে?
ক) বায়োমেট্রিক্স খ) বায়োইনফরমেটিক্স গ) বায়োটেকনোলজি ঘ) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
৩। কোনটি বায়োমেট্রিক্সে ব্যবহৃত হয়?
ক) সেন্সর খ) ডিজিটাল মিটার গ) ওয়েট মিটার ঘ) থার্মোমিটার
৪। বায়োমেট্রিক্সে মানুষের আচরণগত বৈশিষ্ট্য হলো-
i. ভয়েস রিকগনিশন ii. ডিএনএ iii. সিগনেচার ভেরিফিকেশন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii খ) i ও iii গ) ii ও iii ঘ) i, ii ও iii
৫। বায়োমেট্রিক্সে মানুষের শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য হলো-
i. ফেইস রিকগনিশন ii. ডিএনএ iii. ফিঙ্গার প্রিন্ট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii খ) i ও iii গ) ii ও iii ঘ) i, ii ও iii
এই অধ্যায়ের সকল MCQ দেখতে ক্লিক করো
Written by,
- Mizanur Rahman (Mizan)
- Lecturer in ICT, Shaheed Bir Uttam Lt. Anwar Girls’ College , Dhaka Cantonment
- Founder & Author at www.edupointbd.com
- Software Engineer at mands IT
- Former Lecturer in ICT, Cambrian College, Dhaka
- Contact: 01724351470
awesome😍😘
অসাধারণ
Fantastic.Thank you for your help