ইন্টারনেট অফ থিংস কী?
ইন্টারনেট অফ থিংস ( IOT: Internet of Things ) বুঝার জন্য প্রথমেই ইন্টারনেট কী? কেন ব্যবহৃত হয়? এবং সেই সাথে সেন্সর কী? এই সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ইন্টারনেট হলো ইন্টারকানেক্টেড নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ পৃথিবীর সকল নেটওয়ার্ক একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে সর্ববৃহৎ যে নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে সেটিই হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেটকে সংযোগ ব্যবস্থাও বলা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা একে-অপরের সাথে খুব সহজেই বিশ্বের যেকোন প্রান্তে তথ্য আদান-প্রদান বা যোগাযোগ করতে পারি।
এবার চলো দেখি, ‘ইন্টারনেট অফ থিংস’ বলতে কি বুঝাচ্ছে –
থিংস (things) মানে বস্তু; এক্ষেত্রে থিংস বলতে স্মার্ট ইলেকট্রনিক ডিভাইসসমূহ যেমন: ক্যামেরা, টিভি, ফ্রিজ, লাইট, অডিও সিস্টেম, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদিকে বুঝাচ্ছে।
অর্থাৎ “ইন্টারনেট অফ থিংস” হলো এমন একটি ধারণা যেখানে স্মার্ট ইলেকট্রনিক ডিভাইসসমূহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে-অপরের সাথে সংযুক্ত থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বা তথ্যের আদান-প্রদান এবং তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এই ধারণায় প্রতিটি থিংস (things), সেন্সর এর সাহায্যে তার আশপাশ পরিবেশ থেকে তথ্য নিয়ে থাকে। সেন্সর হলো বহুল পরিচিত একটি যন্ত্র। এটি কনভার্টার হিসেবে কাজ করে থাকে। অর্থাৎ পরিবেশগত কোন পরিবর্তনকে তড়িৎ সিগন্যালে রূপান্তর করতে পারে। এটি শব্দ, তাপ, আলো ইত্যাদির প্রতি সাড়া দিতে পারে ।
বর্তমানে এই সেন্সর গুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য গুলোকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর সাহায্যে যাচাই করে দেখা যায়। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্যাটার্ন গুলোকে পর্যবেক্ষন করে বা তথ্য বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুজে বের করতে পারে।
চলো একটি দৃশ্যকল্প দেখি-
ধরো, তোমার কলেজ ছুটি হয়েছে, এবার বাসায় আসার পালা, তোমার হাতে থাকা স্মার্ট ঘড়ি বা স্মার্ট ব্যান্ড একটি নোটিফিকেশন দিলো কোন রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম কম এবং তোমার বাসায় AC কে একটি নোটিফিকেশন প্রেরণ করলো তোমার বাসায় পৌঁছতে কতক্ষণ লাগবে। AC নির্দিস্ট সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন হয়ে রুমের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করে দিলো। এরপর বাসায় দরজার সামনে দাঁড়ানোর সাথে সাথেই দরজা খুলে গেলো। রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথেই লাইট অন হয়ে গেলো। রুমের ক্যামেরা তোমার ফেস স্ক্যান করে তোমার মুড বুঝে স্মার্ট অডিও সিস্টেমে একটি গান প্লে করে দিলো ইত্যাদি ইত্যাদি। তুমি ভাবছো এইসব বাস্তবে সম্ভব নয়! তাইতো? এটি বাস্তবে সম্ভব “ইন্টারনেট অফ থিংস” এর মাধ্যমে।
“ইন্টারনেট অফ থিংস” পরিভাষাটির প্রচলন শুরু হয় ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অটো-আইটি সেন্টারের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক কেভিন অ্যাশটনের মাধ্যমে। ১৯৯৯ সালে পি অ্যান্ড জি কোম্পানির একটি প্রজেক্টে কাজ করার সময় কেভিন “ইন্টারনেট অফ থিংস” পরিভাষাটি ব্যবহার করেন।
আইওটি এর উপাদানসমূহ হলো:
- ব্যবহারকারী
- অবকাঠামো
- থিংস
- প্রক্রিয়া
- ডেটা
ব্যবহারকারী: যারা আইওটি ডিভাইসগুলো ব্যবহার করবে।
অবকাঠামো: অবকাঠামো হলো ইন্টারনেট কানেকশন।
থিংস: থিংস হলো স্মার্ট ইলেকট্রনিক ডিভাইসসমূহ যারা কানেক্টড থাকবে । যেমন: ক্যামেরা, টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি ।
প্রক্রিয়া: যে পদ্ধতিতে এই থিংসগুলো কানেক্টড থাকবে ।
ডেটা: সেন্সর কর্তৃক প্রেরিত বা গৃহীত ডেটা।
আইওটি এর প্রয়োগক্ষেত্র:
- স্মার্ট হোম তৈরিতে
- স্মার্ট সিটি তৈরিতে
- ইন্ডাস্ট্রি অটোমেশনে
- মেডিক্যাল ও হেলথ কেয়ারে
- শিক্ষা ক্ষেত্রে
- সিকিউরিটি ব্যবস্থায়
- যোগাযোগ ব্যবস্থায়
- কৃষি ক্ষেত্রে
Written by,
- Mizanur Rahman (Mizan)
- Lecturer in ICT, Shaheed Bir Uttam Lt. Anwar Girls’ College,Dhaka Cantonment
- Author at www.edupointbd.com
- Software Engineer at mands IT
- Former Lecturer in ICT, Cambrian College, Dhaka
- Email: mizanjust@gmail.com
- Cell: 01724351470